ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানকে বুকে ধারণ করে সৎ,যোগ্য ও নাগরিক তৈরী করতে জামায়াত বদ্ধপরিকর — এটিএম মাছুম

পূর্ব বাংলা ডেক্স!
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাদেশপ্রেমিকমীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিসদ সদস্য জননেতা এ.টি.এম মাছুম বলেছেন, বাইয়াতবদ্ধ জীবন আল্লাহর দ্বীন কায়েমের জন্য অপরিহার্য অনুষঙ্গ। যুগে যুগে দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য একদল মর্দে মুজাহিদ তাদের জান-মাল উৎসর্গ করে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়। এই শপথের মাধ্যমেই একনিষ্ঠ কর্মীরা সার্বক্ষনিক জীবন বাজি রেখে লড়াই করতে প্রস্তুত থাকে। সাহাবায়ে কেরাম রাসুল (সা:) কাছে বাইয়াত নিয়েছেন। আল কুরআনের আলোকে সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে সাহবায়ে কেরামগণের মতো ধৈর্য, সহনশীলতা, সাহসিকতা, হিজরত, শাহাদাত এর মতো ত্যাগ-কুরবানীর অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। আর জুলাইয়ের ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানকে বুকে ধারণ করে দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরী করার মাধ্যমে কল্যাণমুখী ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গঠনে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখতে হবে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের উদ্যোগে রুকনপ্রার্থী ও অগ্রসর কর্মীদের নিয়ে দিনব্যাপী শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার আমীর আনোয়ারুল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল হক এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শিক্ষা শিবিরে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল টীম সদস্য জনাব জাফর সাদেক ও চট্টগ্রাম মহানগরীর নায়েবে আমীর পরিবেশবিজ্ঞানী নজরুল ইসলাম ।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ, ড. হেলাল উদ্দীন নোমান, জেলা এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী মুহাম্মদ জাকারিয়া, অধ্যক্ষ মাওলানা জহিরুল ইসলাম, এডভোকেট আবু নাছের, সাংগঠনিক সেক্রেটারী মাওলানা নুরুল হোছাইন, অধ্যাপক মাহমুদুল হাছান, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা কামাল উদ্দীন, নুরুল হক, মাওলানা আবুল ফয়েজ, মাওলানা আরেফে জামী, ইঞ্জিনিয়ার শহীদুল মোস্তফা ও আরিফুর রশীদ সহ প্রমুখ উপজেলা ও থানা নেতৃবৃন্দ।

প্রধান অতিথি আরও বলেন, সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিগণ মন্দ বা গর্হিত কাজের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। যার ফলে ইসলামী দলগুলোর প্রতি জনসমর্থন থাকলেও প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের হুমকিতে জনগণ ইসলামী আন্দোলনকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন করতে পারছেন না। তাই ভালো কাজের প্রতিযোগিতা দিয়ে কুরআন সুন্নাহর কাজকে এগিয়ে নিতে হবে।

বিশেষ অতিথি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন যাবৎ স্বৈরাচারের যাতাকলে পিষ্ট। মানুষের মৌলিক অধিকার বলতে কিছুই ছিলনা। বৈষম্য কোন সেক্টরে বাকি ছিলনা। জুলাইয়ের ছাত্রজনতার অভ্যুত্থান বৈষম্যের দীর্ঘমেয়াদী শিকলকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। জনগণ আর কোন বৈষম্যবাদকে বাংলার জমিনে কায়েম হতে দিবে না ইনশাআল্লাহ।

বিশেষ অতিথি জাফর সাদেক বলেন, আনুগত্য ইসলামী আন্দোলন সফলতার পূর্বশর্ত। আনুগত্যহীনতা সংগঠনের শৃংখলা রক্ষার ক্ষেত্রে মারাত্মক ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। আনুগত্যহীনতার কারণে জাহেলিয়াতের পরিবেশ তৈরী হয়। আনুগত্য ও শৃংখলার অভাবে একটি মজবুত সংগঠন খুব দ্রুত ভেঙ্গে পড়ে। পরামর্শ ও মোহাসাবার মাধ্যমে আনুগত্যের পরিবেশ তৈরী হয়। আনুগত্য, পরামর্শ ও মোহাসাবার সংগঠনকে সর্বপর্যায়ে সঠিকভাবে পরিচালনা ও দ্বীনি পরিবেশ সংরক্ষণ করতে সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে।

বিশেষ অতিথি নজরুল ইসলাম বলেন, ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা হবেন অনুপম সৌন্দর্যমন্ডিত চরিত্রের অধিকারী। মৌলিক মানবীয় গুণে হবেন গুণান্বিত। তাদের ব্যবহারিক জীবন হবে সবচেয়ে অমায়িক। মুখের ভাষা হবে মধুর। আচরণ হবে অত্যন্ত মার্জিত। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ব্যবহারিক জীবনের প্রভাবে পরিবার, সমাজসহ পুরো এলাকায় ইসলামী আন্দোলনের ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া পড়বে। আমাদেরকে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে আমাদের কথায়, আচরণে যেন কেউ কষ্ট না পায়।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা আমীর আনোয়ারুল আলম চৌধুরী বলেন, সমাজের একশ্রেণীর মানুষ ইসলামকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে ইসলামকে কলঙ্কিত করেছে। সমাজ থেকে ঘুষ, দুর্নীতি ও বৈষম্য দূর করতে হলে তাকওয়া সম্পন্ন মানুষের প্রয়োজন। আর তাকওয়া সম্পন্ন ব্যক্তিদের সমাজের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে হবে।